গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
জেলা সমবায় কার্যালয় বঙ্গবন্ধুর দর্শন
কিশোরগঞ্জ। সমবায়ে উন্নয়ন
স্মারক নং-47.61.4800.000.40.009.99-486 তারিখঃ 10/03/2021খ্রিঃ
বিষয়ঃ নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনার সরকার : প্রসঙ্গ সমবায় শীর্ষক সাফল্যগাথা প্রকাশের নিমত্তে সফল মহিলা সমবায়
সমিতির তথ্য প্রেরণ সংক্রান্ত।
সুত্রঃ যুগ্ম নিবন্ধক,বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়,ঢাকা বিভাগ ঢাকা মহোদয়ের স্মারক নং-577(14) তাং07/03/2021 খ্রিঃ
উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রস্থ স্মারকের প্রেক্ষিতে অত্র জেলাধীন নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনার সরকার : প্রসঙ্গ সমবায় শীর্ষক সাফল্যগাথা প্রকাশের নিমিত্তে সফল মহিলা সমবায় সমিতির প্রতিবেদন সংক্রান্ত তথ্য অত্র সাথে মহোদয়ের সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করা হলো।
সংযুক্তঃ 11 পাতা।
¯^vÿwiZ/-
জেলা সমবায় অফিসার
কিশোরগঞ্জ।
ফোন নং-০৯৪১৬১৭৩২
ই-মেইলঃ dco_kishoreganj@yahoo.com
যুগ্ম-নিবন্ধক
বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়
ঢাকা বিভাগ, ঢাকা।
সফল মহিলা সমবায় সমিতির তথ্য (কিশোরগঞ্জ)
‘‘শিমুলকান্দি প্রত্যাশা মহিলা সমবায় সমিতি লিঃ’’
সমিতির প্রাথমিক বিবরণী : সামাজিক আর অসাম্যতা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে নারী সমাজকে সংগঠিত করে সমবায়ের মাধ্যমে উদ্যোগতা সৃষ্টি, আয়বর্ধক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র বিমোচনসহ সর্বোপরি নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ‘‘সমবায় শক্তি, সমবায় মুক্তি’’ এই শ্লোগানকে উজ্জিবিত হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার শিমূলকান্দি এলাকার পিছিয়ে পড়া মহিলাদের নিয়ে গড়ে উঠে শিমুলকান্দি প্রত্যাশা মহিলা সমবায় সমিতি লিঃ। ২০ জন সদস্য নিয়ে জেলা সমবায় কার্যালয়, কিশোরগঞ্জ থেকে নিবন্ধন নং-40,তারিখঃ-09/১২/২০14 নিয়ে কাজ শুরু করে। সমিতির কর্মএলাকা হল সমগ্র ভৈরব উপজেলা এলাকার ভৌগলিক সীমানার মধ্যে ইহার কর্মকান্ড সীমাবদ্ধ এবং সমিতির সদস্য নির্বাচনী এলাকা সমগ্র ভৈরব উপজেলা এলাকায় বসবাসরত মহিলা কর্মজীবীদের মধ্যে সদস্যপদ সীমাবদ্ধ।
সমিতি গঠনের প্রেক্ষাপট/ইতিহাস : কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলা শিমুলকান্দি এলাকার দরিদ্র পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য হেইপার (সংস্থা)এর সহায়তায় উন্নয়ন দল গঠন করে এবং উন্নয়ন দলের সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের আয়মূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে আয়ের পথ সৃষ্টি করে দেন। উপজেলা শিমুলকান্দি ইউনিয়নে এলাকার অত্যন্ত অবহেলিত, নিম্নশ্রেণির সমাজে পিছিয়ে পড়া পরিবারের ও ঘরকুনো মহিলাদের বিভিন্ন দল থেকে ২০ জন মহিলা সদস্য নিয়ে সংগঠিত হয়। কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলা শিমুলকান্দি একটি জনবহুল এলাকা। এ এলাকায় বিভিন্ন পেশার খেটে খাওয়া মানুষের বসবাস। উক্ত এলাকার পিছিয়ে পড়া মহিলাদের নিয়ে এই সমবায় সমিতি ২০ জন সদস্য নিয়ে প্রথমে কাজ শুরু করে। মহিলারা ছিল অশিক্ষিত, ঘরকুনো, অসচেতন এবং উপার্জনক্ষম। প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের বয়ষ্ক শিক্ষা ও আত্মসচেতন মূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে সমিতির কর্মকান্ড শুরু হয়।
সমিতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ সমবায়ের ভিত্তিতে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সহায়ক কুঠির ও মাঝারী শিল্প স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা। নারীর ক্ষমতায়ন ও আত্ম-কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা এবং ঘরে আবদ্ধ থাকা মহিলাদের আলোর পথ দেখানো। সঞ্চয়ের প্রতি উদ্ভূদ্ধ করা এবং সঞ্চয়ের মাধ্যমে সদস্যদের আর্থিক সামর্থ বৃদ্ধিতে অবদান রাখা। দারিদ্র বিমোচন স্ব-কর্মসংস্থানমূলক উদ্যোগসমুহ বাস্তবায়নে সমিতির নিজস্ব মূলধন হতে সহজ শর্তে সদস্যকে ঋণ সহায়তা প্রদান করা। সভ্যগনের উৎপাদিত দ্রব্যাদি সংগ্রহ ও বিক্রয়, ভোগ্য পণ্য দ্রব্যাদি সংগ্রহ ও বিতরন। নিবন্ধিত উপ-বিধিতে বর্ণিত প্রধান প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ হচ্ছে সমবায় আদর্শ ও নীতির ভিত্তিতে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নারী সদস্যদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা। সমবায় ভিত্তিতে নারী সদস্যদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শেয়ার ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করে লাভজনক প্রকল্পে বিনিয়োগ করা এবং সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও সেবামূলক কাজে উদ্বুদ্ধকরণ। সদস্যদের মধ্যে সঞ্চয় বৃদ্ধি ও মিতব্যয়িতার শিক্ষা দেয়া। বর্তমানে উদ্দেশ্যসমূহ বাস্তবায়নে সমিতির কার্যক্রম সন্তোষজনক।
নারীর ক্ষমতায়নে সমিতির উদ্যোগ ও ভূমিকা : নারীর ক্ষমতায়নে সমিতি বিভিন্ন উদ্যোগ ও ভূমিকা রয়েছে। সমিতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নারীর ক্ষমতায়ন অত্যন্ত জরুরী। সমাজের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে সমবায় সমিতি অন্যান্য সংগঠন থেকে অধিক কার্যকর তাই পিছিয়ে পড়া নারীদের সমবায় সমিতিতে সদস্য হিসেবে অর্ন্তভূক্তির জন্য সমবায় সর্ম্পকিত প্রশিক্ষণ এবং নেতৃত্ব বিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমবায় সমিতি সমাজে জনসাধারণকে সংঘবদ্ধ করে এবং যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য টিম এ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সমিতির গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন ও সাধারণ সভা অনুষ্টান করার ফলে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটছে। মহিলাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য ঋণ প্রকল্প এবং বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু রেখেছে ফলে মহিলাদের পারিবারিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সমিতির অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
সামাজিক কার্যক্রমঃ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় দিবস পালন করে সদসদের দেশ, সমাজ ও জাতী গঠনে এই সমিতি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। এলাকার বিভিন্ন দুর্যোগ ও অগ্নিকান্ডে সমিতির পক্ষ থেকে সাহায্য প্রদান করা হয়। মৃত সদস্যদের মরণোত্তর সেবা ও সাহায্য প্রদান করা হয়। গরীব ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা করার জন্য অনুদান প্রদান করা হয়। বাল্য বিবাহ রোধে সমিতির অফিস কক্ষে সভা সেমিনার করে থাকেন। অল্প সময়ের মধ্যে সমিতির আর্থিক উন্নয়নের পাশাপাশি সদস্যদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে আসছে।
সমিতির প্রাতিষ্ঠানীকরণে গৃহীত পদক্ষেপ : সদস্যদের মাঝে স্বচ্ছতা ও আস্থা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান, মাসিক সভা, অডিট সম্পাদন এবং বার্ষিক সাধারণ সভা নিয়মিত করা হয়। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের 25/01/২০20 খ্রি.তারিখ অন্তর্বতী ব্যবস্থাপনা কমিটি বিদ্যামান আছে । ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মোট ১২টি মাসিক সভা করা হয়েছে। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের অডিট সম্পাদন করা হয়েছে 24/11/২০20খ্রি. তারিখে। সর্বশেষ বার্ষিক সাধারণ সভার তারিখ 23/১2/২০19খ্রি.। রেকর্ডপত্র সংরক্ষণের অবস্থা সন্তোষজনক। সমিতির রেকর্ডপত্র সমিতির সকল সদস্যদের জন্য সমিতিতে উম্মুক্ত রাখা হয়। প্রতিনিয়ত অডিট ফি ও সিডিএফ পরিশোধ করা হয়। সমিতির অফিস কক্ষে ডিজিটাল সাইনবোর্ড এবং সমিতিতে পর্যাপ্ত সীলমোহর রয়েছে। এছাড়াও সমিতির নিজস্ব একটি লোগো আছে। সমিতির ধারাবাহিকতা ও টেকসইত্ব নিশ্চিতকরণে সমবায় সমিতি আইন ২০০১ (সংশোধন ২০০২ ও ২০১৩) এবং সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ (সংশোধন ২০২০) এর সংশ্লিষ্ট ধারা পতিপালনের ফলে সমিতিতে গতিশীলতা এসেছে। সমিতির কর্মকান্ড দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে। সমিতিতে উলেস্নখযোগ্য কোন জটিলতা থাকছে না।
প্রশিক্ষণ ভিত্তিক কার্যক্রমঃ যে কোন উন্নয়নের পূর্বশর্ত যথাযথ প্রশিক্ষণ। সমিতির বেশিরভাগ সদস্যকে ভর্তি কালে সমবায় সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ প্রদান করে সমবায় মনোভাবাপন্ন করে গড়ে তোলা হয়। এরই পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিতকরণ, নিউট্রেশন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতন হিসেবে গড়ে তোলা হয়। বয়স্ক শিক্ষা ও প্রি-স্কুল পরিচালনা করে তাদের এবং তাদের পোষ্যদের শিক্ষামুখী করা হয়। প্রতিটি সদস্যের আর্থিক উন্নয়নে সদস্য এবং তাদের পোষ্যদের কম্পিউটার, বিউটি পার্লার, টেইলারিং, ব্লক বাটিক সহ বিভিন্ন ট্রেড প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এলাকার মহিলাদের এবং তাদের পোষ্যদের কর্মমুখী করা হয়।
কর্মসংস্থানঃ সমিতিতে বর্তমানে 7 জন নিয়মিত বেতনধারী কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে তাদের সরাসরি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কর্মচারীদের জন্য চাকুরী বিধিমালা পদবিন্যাস, গ্রাচুইটি ও পি.এফ ফান্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসিক বেতন প্রদানের পরিমাণ 55,800 /- টাকা। সমিতির সদস্য তথা এলাকার অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া 546 জন মহিলাদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে সমিতির উদ্যোগে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে প্রায় ১০০ জন সদস্য ও সদস্যের বেকারত্ব দূর করতঃ এদের স্ব-কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আর্থিক কার্যক্রমঃ সমিতির সদস্যদের উপর জরিপ কার্য পরিচালনা করতঃ তা পর্যালোচনা করে সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটি সমিতির কর্মকান্ড পরিচালনা করে এবং সদস্যদের ঋণ দিয়ে থাকে। এ সমিতির ঋণ আদায়ের হার শতভাগ। মাত্র ২০ জন সদস্য নিয়ে সমিতিটি নিবন্ধিত হলেও বর্তমানে সদস্য সংখ্যা 546 জন। নিবন্ধনকালীন সময়ে সমিতির আদায়কৃত শেয়ার মূলধনের পরিমাণ ২০,০০০/- লক্ষ টাকা। আদায়কৃত সঞ্চয় আমানতের পরিমাণ 2০,০০০/- টাকা ভর্তি ফি আদায় 0 টাকা নিয়ে শুরু করা এই সমিতির বর্তমান আর্থিক অবস্থা হল মোট অস্থায়ী/স্থায়ী সম্পদ ১,31,210/- টাকা, বিনিয়োগ 6,63,000/- টাকা, ব্যাংক হিসাব 12,96,989/- টাকা, পরিশোধিত শেয়ার মূলধন 12,09,800/- টাকা, সংরক্ষিত তহবিল 11,43,293/- টাকা, কু-ঋণ তহবিল 3,23,840/- টাকা, কল্যাণ তহবিল 5,62,230/- টাকা, ক্রমপুঞ্জিভূত বন্টনযোগ্য লভ্যাংশ 3,70,527/- টাকা, সাধারণ সঞ্চয় 30,77,130/- টাকা, প্রতি বছর সদস্যদের আমানতের উপর ৮% হারে সুদ প্রদান করা হয় এবং প্রতি বছর গড়ে ১ লক্ষ টাকার অধিক শেয়ারের উপর লভ্যাংশ প্রদান করা হয়েছে। সমিতির বর্তমান কার্যকরী মূলধন প্রায় 80,84,374/- টাকা।
সমিতির সার্বিক ব্যবস্থাপনাঃ সমিতির একটি অফিস ঘর রয়েছে যার ভাড়া প্রতি মাসে ৫,0০০/- টাকা। এছাড়াও সমিতির আর্থিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ এর ৫৬ বিধি মোতাবেক সকল রেজিস্টার সমিতিতে সংরক্ষিত আছে। এছাড়া আভ্যন্তরীন নিরীক্ষা কমিটির মাধ্যমে প্রতি মাসে একবার সমিতির আর্থিক কার্যক্রমের নিরীক্ষা সম্পাদন করা হয় এতে সমিতিতে কোন ধরণের কাপচুরি সংঘটিত হয়না। ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের দক্ষ করে গড়ে তোলার নিমিত্ত সমিতির প্রতিনিয়ত সমবায় ব্যবস্থাপনা, নেতৃত্ব বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। দক্ষ কর্মকর্তা/কর্মচারী সৃজনের জন্য সমিতিতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
সমিতির কার্যক্রমসমূহ/প্রকল্পসমূহ : সমিতির উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমসমূহ হল শেয়ার ও সঞ্চয় আদায় কার্যক্রম, ঋণ কার্যক্রম, সামাজিক কার্যক্রম, মরনোত্তর সেবা কার্যক্রম, ব্লক বুটিক, টেইলারিং, জুয়েলারী পণ্য তৈরী, চামড়াজাত পণ্য তৈরী, বিউটি পার্লার, প্রি স্কুল, উৎপাদনমুখী কার্যক্রম ইত্যাদি।
সমিতির সাফল্যের অনুঘটক : (ক)সমিতির সাফল্যের কারণ সমূহ উল্লেখ করলে বলতে হয় সমিতির সদস্যরা ঋণ গ্রহণের পর লভ্যাংশসহ যথাসময়ে স্বঃস্পূর্তভাবে ঋণ প্রদান করে থাকেন। সমিতির প্রতিটি সদস্য সমিতির প্রতি আন্তরিক। সমিতি সদস্যদের শেয়ারের উপর লভ্যাংশ এবং সঞ্চয়ের সুদ নিয়মিত প্রদান করে থাকেন। সমিতির গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন ও সাধারণ সভা অনুষ্টান করা হয়। উৎপাদনমুখী কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ ও ঋণ কার্যক্রমের ফলে স্বকর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও এলাকায় বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য সমিতি বিভিন্ন প্রকার সামাজিক কার্যক্রম চালু রয়েছে। সমিতির অগ্রযাত্রায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা/অন্তরায়সমূহ হল সমিতির কর্ম এলাকায় নারীরা অতীব গরীব হওয়ায় প্রযোজনীয় অর্থের অভাবে সদস্যদের চাহিদা মোতাবেক ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত করতে পারছে না। সদস্যদেরকে যুগোপযোগি বিভিন্ন ট্রেডে চাহিদা মোতাবেক প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা থাকলেও প্রয়োজীনয় অর্থের অভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।
খ) যাদের উদ্যোগে সমিতি বতর্মান অবস্থা :- প্রকৃতি সুন্দর্যে বেষ্টিত কোদাল-কাটি নদী পাশ দিয়ে ভয়ে যাওয়া ভৈরব উপজেলার শিমুলকান্দি গ্রাম । এ গ্রামে বসবাসরত মোছাঃ নার্গিছ বেগম (অত্র সমিতির প্রাক্তন সভাপতি), মোছাঃ কুশিয়ারা বেগম (প্রাক্তন সহ-সভাপতি), রোমা বেগম (প্রাক্তন সম্পাদক) অবহেলিত ঘরকোন নারীগণ সমাজের বিভিন্ন দিকে থেকে বঞ্চিত ও অবহেলিত হয়ে লক্ষ্য করেন আমাদের এভাবে অবহেলিত থাকলে আর চলবে না। তাই তাদের নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে 20 জন সদস্য নিয়ে সমবায় বিভাগ হতে এই শিমুলকান্দি প্রত্যাশা মহিলা সমবায় সমিতি গঠনের উদ্যোগ নেয় এবং নিবন্ধন নিয়ে কার্য্ক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে হেইপার সংস্থা তাদের মধ্যে অভাবনীয় সম্ভাবনা লক্ষ্য করে কিছু অনুদান প্রদান করে । ধীরে ধীরে সদস্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং এর সুফল পেয়ে নারীরা আজ এ সমিতিতে 546 জন সদস্যে উন্নীত হয়। এতে বতর্মানে আথ- সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটিয়ে অবহেলিত নারীরা সামাজিক ভাবে আত্নমর্যাদাসম্পন্ন ও স্বালম্বী। নিজেরা নিজেদের পায়ে দাঁড়ানো ,বাল্য-বিবাহ রোধ, যৌতুক বিরোধী আন্দোলন, বিভিন্ন স্কুল কমিটিতে অংশগ্রহ ও অবহেলিত মহিলাদের দেন দরবারের মাধ্যমে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছে।
সমিতির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা : সমিতির ভবিষ্যৎ স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা ও প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সমিতির জন্য স্থায়ী সম্পদ, সদস্যদের জন্য বাসস্থান, ডে-কেয়ার সেন্টার, আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ প্রশিক্ষণ ল্যাব এবং প্রশিক্ষিত সদস্যদের নিয়ে ক্ষুদ্র অথবা মাঝারী শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
উপসংহারঃ সমিতিটি অত্র এলকার অবহেলিত ও নিম্নশ্রেণীর মহিলাদের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষে বিভিন্ন আত্মসচেতনতা মূলক প্রশিক্ষণ প্রদান ও জনসচেতনতা মূলক কর্মকান্ড, কর্মসংস্থান ও স্ব-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অনগ্রসর মহিলা ও তাদের পৌষ্যদের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রেখে আসছে। এর ফলে আলোচ্য সমিতি একদিন সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাবে।
চিত্রঃ শিমুলকান্দি প্রত্যাশা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেড এর ছাগল পালন এর স্থিরচিত্র।
চিত্রঃ শিমুলকান্দি প্রত্যাশা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেড এর হাস পালন এর স্থিরচিত্র।
চিত্রঃ শিমুলকান্দি প্রত্যাশা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেড এর পশু পালন এর স্থিরচিত্র।
চিত্রঃ শিমুলকান্দি প্রত্যাশা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সবজী চাষ এর স্থিরচিত্র।
চিত্রঃ শিমুলকান্দি প্রত্যাশা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেড এর গাভী পালন এর স্থিরচিত্র।
চিত্রঃ শিমুলকান্দি প্রত্যাশা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সমবায়ীদের প্রশিক্ষণ এর স্থিরচিত্র।
চিত্রঃ শিমুলকান্দি প্রত্যাশা মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সদস্যদের নিয়ে উঠান বৈঠক এর স্থিরচিত্র
সফল সমবায় সমিতির তথ্য
উপজেলা: করিমগঞ্জ, জেলা: কিশোরগঞ্জ।
সমিতির নাম: করিমগঞ্জ মহিলা সমবায় সমিতি লিঃ
সমিতির প্রাথমিক বিবরণী : ‘‘সমবায় শক্তি, সমবায় মুক্তি’’ এই শ্লোগানকে সামনের রেখে আর্থ সামাজিক এবং নারী সমাজকে সংগঠিত করে সমবায়ের মাধ্যমে উদ্যোগতা সৃষ্টি, আয়বর্ধক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র বিমোচনসহ সর্বোপরি নারীদের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষিত করে এবং উজ্জিবিত হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলায় মহিলাদের নিয়ে গড়ে উঠে করিমগঞ্জ মহিলা সমবায় সমিতি লিঃ। ২০ জন সদস্য নিয়ে তৎকালীন সহকারী নিবন্ধক ও জেলা সমবায় কার্যালয়, কিশোরঞ্জ থেকে নিবন্ধন নং-১৮৬ ,তারিখঃ-২৭/০৪/১৯৭৭ প্রাপ্ত হয়ে সমিতির যাত্রা শুরু হয়। সমিতির কর্মএলাকা এবং সভ্য এলাকা হলো সমগ্র করিমগঞ্জ, চরপাড়া. নয়াকান্দি ও খুদির জঙ্গল এলাকা ব্যাপী।
সমিতি গঠনের প্রেক্ষাপট/ইতিহাস : কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলায় ১৯৭৭ সালে দরিদ্র পরিবারের বিশেষ করে নারীদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য বর্তমান সমিতির সভাপতি সাহিদা আক্তার খানমের প্রচেষ্টায় অবহেলিত, নিম্নশ্রেণির সমাজে পিছিয়ে পড়া পরিবারের অবহেলিত মহিলাদের নিয়ে সংগঠিত হয়। উক্ত এলাকার হত দরিদ্র মহিলাদের নিয়ে এই সমবায় সমিতি ২০ জন সদস্য নিয়ে প্রথমে সমিতির যাত্রা শুরু করে। প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের বয়ষ্ক শিক্ষা ও আত্মসচেতন মূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সমিতির কর্মকান্ড শুরু হয়।বর্তমানে সমিতি এ উপজেলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে।
সমিতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ উপ আইনের বর্ণিত সমিতির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য এর পাশাপাশি সমবায়ের ভিত্তিতে উৎপাদন বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কুঠির শিল্প, নারীর ক্ষমতায়ন ও আত্ম-কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করাই এ সমিতির মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য । তাছাড়া মহিলাদের নিকট হতে সঞ্চয়ের প্রতি উদ্ভূদ্ধ করা এবং সঞ্চয়ের মাধ্যমে পূজি গঠন করতঃ নিজস্ব মূলধন হতে ক্ষুদ্র ঋন কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন স্ব-কর্মসংস্থানমূলক উদ্যোগসমুহ বাস্তবায়নে সমিতির উদ্দেশ্য। তাছাড়া সভ্যগনের উৎপাদিত দ্রব্যাদি সংগ্রহ ও বিক্রয়, ভোগ্য পণ্য দ্রব্যাদি ,সেলাই প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করে তা বিবণন করা , সমবায় আদর্শ ও নীতির ভিত্তিতে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নারী সদস্যদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করাই সমিতির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। সমবায় ভিত্তিতে নারী সদস্যদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শেয়ার ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করে লাভজনক প্রকল্পে বিনিয়োগ করা এবং সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও সেবামূলক কাজেই সমিতির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য।
নারীর ক্ষমতায়নে সমিতির উদ্যোগ ও ভূমিকা : নারীর ক্ষমতায়নে সমিতি বিভিন্ন উদ্যোগ ও ভূমিকা রয়েছে। সমিতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নারীর ক্ষমতায়ন অত্যন্ত জরুরী। সমাজের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে সমবায় সমিতি অন্যান্য সংগঠন থেকে অধিক কার্যকর তাই পিছিয়ে পড়া নারীদের সমবায় সমিতিতে সদস্য হিসেবে অর্ন্তভূক্তির জন্য সমবায় সর্ম্পকিত প্রশিক্ষণ এবং নেতৃত্ব বিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমবায় সমিতি সমাজে জনসাধারণকে সংঘবদ্ধ করে এবং যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সমিতির গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন ও সাধারণ সভা অনুষ্টান করার ফলে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটছে। মহিলাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য ঋণ প্রকল্প এবং বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালুর ফলে মহিলাদের পারিবারিক মর্যাদা বৃদ্ধি লক্ষণীয় ।
সামাজিক কার্যক্রমঃ এ সমিতির বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত আছে। যেমন সমিতি হতে সহজ শর্তে ঋণ গ্রহণ করে ক্ষুদ্র পরিসরে হাঁস মুরগী পালন, গরুমোটাতাজাকরণ, হোমিওপ্যাথিক শিশি তৈরী , মুড়ি ভাজা, শাক সবজি চাষ, সেলাই প্রশিক্ষণ ইত্যাদি । এ সমিতি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় দিবস পালন করে সদসদের দেশ, সমাজ ও জাতী গঠনে এই সমিতি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। এলাকার বিভিন্ন দুর্যোগ ও গরীব সদস্যদের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি, সেনেটেশান, বাল্য বিবাহ রোধ কল্পে সচেনতা বৃদ্দি,পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ সমিতির পক্ষ থেকে সাহায্য প্রদান করা হয়ে থাকে। এ ছাড়াও মৃত সদস্যদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। সমিতির আর্থিক উন্নয়নের পাশাপাশি সদস্যদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে আসছে যা ইতোমধ্যে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সমিতির প্রাতিষ্ঠানীকরণে গৃহীত পদক্ষেপ : সদস্যদের মাঝে স্বচ্ছতা ও আস্থা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান, মাসিক সভা, অডিট সম্পাদন এবং বার্ষিক সাধারণ সভা নিয়মিত করা হয়। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ২৩/৯/২০১৯ খ্রি.। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মোট ১০ টি মাসিক সভা করা হয়েছে। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের অডিট সম্পাদন করা হয়েছে । সর্বশেষ বার্ষিক সাধারণ সভার তারিখ ২০/১২/২০১৯ খ্রি.। রেকর্ডপত্র সংরক্ষণের অবস্থা সন্তোষজনক। সমিতির রেকর্ডপত্র সমিতির সকল সদস্যদের জন্য সমিতিতে উম্মুক্ত রাখা হয়। প্রতিনিয়ত অডিট ফি ও সিডিএফ পরিশোধ করা হয়। সমিতির অফিস কক্ষে ডিজিটাল সাইনবোর্ড এবং সমিতিতে পর্যাপ্ত সীলমোহর রয়েছে। এছাড়াও সমিতির নিজস্ব একটি লোগো আছে। সমিতির ধারাবাহিকতা ও টেকসইত্ব নিশ্চিতকরণে সমবায় সমিতি আইন ২০০১ (সংশোধন ২০০২ ও ২০১৩) এবং সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ (সংশোধন ২০২০) এর সংশ্লিষ্ট ধারা পতিপালনের ফলে সমিতিতে গতিশীলতা এসেছে। সমিতির কর্মকান্ড দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে। সমিতিতে উলেস্নখযোগ্য কোন জটিলতা থাকছে না।
প্রশিক্ষণ ভিত্তিক কার্যক্রমঃ সমিতির সকল সদস্যকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এরই পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিতকরণ, নিউট্রেশন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতন হিসেবে গড়ে তোলা হয়। বয়স্ক শিক্ষা ও প্রি-স্কুল পরিচালনা করে তাদের এবং তাদের পোষ্যদের শিক্ষামুখী করা হয়। প্রতিটি সদস্যের আর্থিক উন্নয়নে সদস্য এবং তাদের পোষ্যদের কম্পিউটার, বিউটি পার্লার, টেইলারিং, ব্লক বাটিক সহ বিভিন্ন ট্রেড প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এলাকার মহিলাদের এবং তাদের পোষ্যদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কর্মসংস্থান ও স্ব-কর্মসংস্থান : সমিতিতে বর্তমানে ২ জন সদস্য স্ব উদ্যোগে নিয়মিত কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। সমিতির নিজস্ব মূলধণ হতে ঋণ গ্রহণ করে সমিতির বেশির ভাগ সদস্যিই তাদের স্ব-কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সমিতির নিজস্ব উদ্যোগে সভ্য নির্বাচনী এলাকা হতে প্রায় ২০০ সদস্যদেরকে সেলাই প্রশিক্ষণ করে স্বাবলম্বী করে তোলা হয়েছে এতে বেকারত্ব দূরসহ স্ব-কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আর্থিক কার্যক্রমঃ সমিতির আর্থিক কার্যক্রম হিসেবে সদস্যদের নিকট থেকে নিয়মিত শেয়ার সঞ্চয় আদায়ের মাধ্যমে নিজস্ব মূলধণ গঠণ করতঃ সদস্যদের মাঝে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করে থাকে। বর্তমানে সমিতির মোট শেয়ার- ৫০৯০০/-টাকা, সঞ্চয় আমানত-৩৩৫৭৪৫/-টাকা, কার্যকরী মূলধণ ৪২১৭৩৬/-টাকা। এ সমিতির ঋণ আদায়ের হার শতভাগ। সমিতিতে বর্তমানে মোট ৬৭ জন ।
সমিতির সার্বিক ব্যবস্থাপনাঃ সমিতির একটি অফিস ঘর রয়েছে । কিন্তু সমিতির সভাপতি জনাব সাহিদা আক্তার খানমের নিজস্ব ঘরে সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে বিধায় অফিস ঘরের ভাড়া দিতে হয় না। এছাড়াও সমিতির আর্থিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ এর ৫৬ বিধি মোতাবেক সকল রেজিস্টার সমিতিতে সংরক্ষিত আছে। সমিতির প্রতি বছের সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক সমিতির আর্থিক কার্যক্রমের উপর নিরীক্ষা সম্পাদন করা হয় । ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের দক্ষ করে গড়ে তোলার নিমিত্ত সমিতির প্রতিনিয়ত সমবায় ব্যবস্থাপনা, নেতৃত্ব বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। সমিতির সার্বিক ব্যবস্থাপনা সন্তোষজনক ।
সমিতির কার্যক্রমসমূহ/প্রকল্পসমূহ : এ সমিতির উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমসমূহ হল শেয়ার ও সঞ্চয় আদায় কার্যক্রম, ঋণ কার্যক্রম, সামাজিক কার্যক্রম, মরনোত্তর সেবা কার্যক্রম, ব্লক বুটিক, টেইলারিং, হোমিওপ্যাথিক শিশি তৈরী, বিউটি পার্লার, উৎপাদনমুখী কার্যক্রম ইত্যাদি।
সমিতির সাফল্যের অনুঘটক :
ক) সমিতি তাদের নিজস্ব পূজি গঠণের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ঋণ সহ বিভিন্ন কার্যত্ক্রমে সমিতি সাফল্যের দাড় প্রান্তে পৌছতে সক্ষম হয়েছে। সমিতির প্রতিটি সদস্য সমিতির প্রতি আন্তরিক। সমিতি সদস্যদের শেয়ারের উপর লভ্যাংশ এবং সঞ্চয়ের সুদ নিয়মিত প্রদান করে থাকেন। সমিতির গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন ও সাধারণ সভা অনুষ্টান করা হয়। সমিতি উৎপাদনমুখী কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ ও ঋণ কার্যক্রমের ফলে স্ব-কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সমিতির অগ্রযাত্রায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা/অন্তরায়সমূহ হল সমিতির কর্ম এলাকায় নারীরা অতীব গরীব হওয়ায় প্রযোজনীয় অর্থের অভাবে সদস্যদের চাহিদা মোতাবেক ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত করতে পারছে না। সদস্যদেরকে যুগোপযোগি বিভিন্ন ট্রেডে চাহিদা মোতাবেক প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা থাকলেও লজিষ্টিক সাপোর্ট এর অভাবে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
খ) সমিতির এ সাফল্যের পিছনে রয়েছে জীবন যুদ্ধের গল্প। ১৯৭৭ ইং সন থেকে বর্তমান সভাপতি জনাব সাহিদা আক্তার খানম সাহসিকতার সাথে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অক্লান্ত পরিশ্রম করে সভ্য নির্বাচনী এলাকার নারীদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রথমিক ভাবে ২০ জন মহিলা সদস্য নিয়ে ”নারীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন” এ উদ্দেশ্যকে সামনে করিমগঞ্জ মহিলা সমবায় সমিতি লি: এর যাত্রা শুরু করে। জনাব সাহিদা আক্তার খানম সমিতিটি নিবন্ধনের পর হতে হত দরিদ্র মহিলা সদস্যদের নিয়ে এলাকার শিক্ষিত ও অর্ধ শিক্ষিত হত দরিদ্র নারীদেরকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি তৈরীর কাজে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করেন। নারীদেরকে সংগঠিত করে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুযোগ সৃষ্টিসহ উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তির উদ্দেশ্যে নিরলস পরিশ্রমরে ফলে সমিতির প্রায় প্রতিটি সদস্যই স্বাবলম্বী। বর্তমান সভাপতি জনাব সাহিদা আক্তার খানমের নিরলস পরিশ্রমের ফলে নারী উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় “জয়িতা অন্বেষনে” উপজেলা/জেলা/বিভাগীয় পর্যায় হতে একাধিক প্রথম পুরুস্কার প্রাপ্ত হয়। ত্র ছাড়াও তিনি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তার্জাতিক দিবসে নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে সেমিনারে বক্তব্য প্রদান করে থাকেন। প্রতি বছরেই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বিভিন্ন সরকারী কর্মসূচীতে উল্লেখযোগ্য অবদানে জনাব সাহিদা আক্তার খানমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সমিতির বর্তমান সভাপতি জনাব সাহিদা আক্তার খানমের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সমবায়ীদের সাথে নীবিড় সম্পৃক্ততায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার ধারাবাহিকতায় করিমগঞ্জ মহিলা সমবায় সমিতি লি: সমবায় সমিতি ক্যাটাগরীতে শ্রেষ্ঠ সমবায় সামিতি হিসেবে জাতীয় সমবায় পুরস্কার/২০১২ হিসেবে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত হয়। যা সমবায় সমিতি তথা করিমগঞ্জ উপজেলা সমবায় অঙ্গনে গৌরব উজ্জল ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সমিতির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা : সমিতির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা ও প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সমিতির জন্য স্থায়ী সম্পদ, সদস্যদের জন্য বাসস্থান, আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রশিক্ষিত সদস্যদের নিয়ে আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যপক পরিকল্পনা রয়েছে।
উপসংহারঃ সমিতিটি অত্র এলকার অবহেলিত ও নিম্নশ্রেণীর মহিলাদের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষে বিভিন্ন আত্মসচেতনতা মূলক প্রশিক্ষণ প্রদান ও জনসচেতনতা মূলক কর্মকান্ড, কর্মসংস্থান ও স্ব-কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অনগ্রসর মহিলা ও তাদের পৌষ্যদের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রেখে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সমিতির সভাপতি জনাব সাহিদা আক্তার খানমের একান্ত প্রচেষ্টায় সমিতির বিভিন্ন কার্যক্রমের উপর জাতীয় সমবায় পুরস্কার/১২ তে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত হয়। মাননীয় প্রধানমণ্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট থেকে সমিতির সভাপতি জনাব সাহিদা আক্তার খানম স্বর্ণ পদক পুরস্কার গ্রহণ করায় সাফল্য অর্জন করেছে।
চিত্রঃ করিমগঞ্জ মহিলা সমবায় সমিতি লিমিটেড এর গাভী পালন এর স্থিরচিত্র।
চিত্রঃ জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০১২ প্রাপ্ত শ্রেষ্ঠ সমবায় সমিতি এর বর্ষীয়ন সমবায়ী এবং সভাপতি সাহিদা আক্তার খানম সদস্যদের সাথে মাসিক সভার স্থিরচিত্র।